বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে জুলাই এক দীর্ঘতম মাস। ৩৬ দিনের রক্তাক্ত সেই জুলাই একই সঙ্গে যেমন অর্জনের, তেমনি সন্তান হারাবার বেদনাও বটে। স্বৈরাচারের বুলেটে এক নদী রক্তের বিনিময়ে জুলাইয়ের অর্জিত বিজয় ছিল মুক্ত পাখির মতো বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের।
অবুঝ শিশু রিয়া গোপ, দুর্বার আবু সাঈদ, মুগ্ধ কিংবা ওয়াসিমের মতো হাজারো অরুণ প্রাতের তরুণ দল রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে এমন দিন।
রক্তাক্ত জুলাইয়ের প্রতিটি দিন ছিল ভয়াল রাতের চেয়ে বিভীষিকাময়। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে নিজ দেশের নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। দেশ ছেড়ে পালাতে হন শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা।
৩৬ জুলাইয়ের বর্ষপূর্তিতে সেসব দিনের স্মৃতিচারণায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনর অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলছেন, কোটা আন্দোলনের মতো যৌক্তিক দাবিকে দমন এবং দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে ফুঁসে ওঠে মানুষ।
অভ্যুত্থানের প্রধান মুখ নাহিদ ইসলামও অভ্যুত্থানের মূল কৃতিত্ব দিচ্ছেন জনমানুষকেই। অংশিজনদের ঐক্য সংহত না থাকায় অনেক প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে মত নাহিদ ইসলামের। জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে শেষমেশ রাজনীতিতে নামতে হয়েছে বলে জানান তিনি।
অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ছাত্র-জনতার অন্তর্বর্তী সরকার হাতে নিয়েছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। বিকেল ৫টায় গণ-অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। দিনব্যাপী মানিক মিয়া এভিনিউতে চলবে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিভিন্ন পন্থায় স্মরণ করা হবে ’২৪- এর ৩৬ জুলাইকে।