সৌদি আরবের তায়েফে ঘটেছে বিরল এক মানবিকতার উদাহরণ। মাজেদ বলদাহ আল রোকির নামে এক ব্যক্তির প্রথম স্ত্রী নুরাহ সালেম আল শাম্মারি স্বামীর অন্য স্ত্রীকে বাঁচাতে নিজের লিভারের ৮০ শতাংশ দান করে তাক লাগিয়েছেন সবাইকে। এই উদার পদক্ষেপ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসার ঝড় তুলেছে। সোমবার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে । প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বিরল আত্মত্যাগের মাধ্যমে স্বামীর অন্য স্ত্রীকে এমন উপহার সকলের হৃদয় জয় করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় স্ত্রী তাগরিদ আওয়াদ আল-সাদির কষ্ট লাঘবে তিনি তার নিজের একটি কিডনি দিয়ে তাকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় তাকে চমকে দিয়ে তার প্রথম স্ত্রী নৌরা সালেম আল-সামারি জানান, সতীনের জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি তার লিভারের ৮০ শতাংশ দান করবেন।
প্র্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বছরের পর বছর ধরে চলা নীরব যন্ত্রণার শেষ পরিণতি এক অসাধারণ উদারতার মাধ্যমে হয়েছে, যখন একজন নারী বেশিরভাগ লিভার তার স্বামীর অন্য স্ত্রীকে দান করেছিলেন।
মাজেদ বলদাহ আল রোকির প্রথম স্ত্রী নুরাহ সালেম আল শাম্মারি দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামীর অন্য স্ত্রী তাগরীদ আওয়াদ আল সাদিকে লিভার ও কিডনিজনিত সমস্যার কারণে এবং বারবার ডায়ালাইসিস চিকিৎসার কারণে দুর্বল হয়ে পড়তে দেখছিলেন।
এই কঠিন সময় বছরের পর বছর ধরে চলছিল। এমনকি উন্নত চিকিৎসার সন্ধানে এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণেও কোনো প্রতিকার হয়নি রোগীর। আল রোকি জানান, তিনি তাগরীদকে একটি কিডনি দান করার জন্য নিজেই অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অস্ত্রোপচারে খারাপ কিছু হলে তিনি নুরাহকে তাদের পাঁচ সন্তানের যত্ন নিতেও বলেছিলেন।
কিন্তু এরপরই নুরাহ তার পরিবারকে হতবাক করে দেন। তিনি তার লিভারের ৮০ শতাংশ দান করার কথা জানান। ডাক্তাররা অঙ্গ প্রতিস্থাপনকে কার্যকর বলে মনে করেন এবং প্রতিস্থাপন সফল হয়। আল রোকি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থার বিষয়ে বলেন, ‘তিনি শুষ্ক মরুভূমিতে বৃষ্টির মতো ছিলেন।’
এই পদক্ষেপটি সৌদি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোড়ন তুলেছে, যা অনেকে ত্যাগ, করুণা এবং বিশ্বাসের বিরল মিশ্রণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একই ছাদের নিচে বসবাসকারী একটি পরিবার এমন আত্মত্যাগের মাধ্যমে অপ্রত্যাশিতভাবে একে অপরের পাশে দাঁড়িনোর এ ঘটনা মন জয় করেছে সকলের।