ড্রোন প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হলো আওয়ামী লীগ শাসনামলের নানা অপকর্মের চিত্র

HEALTH CARE ADVICE
By -
0

ড্রোন শোতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র।
মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়।


জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ‘ড্রোন প্রদর্শনী’র মাধ্যমে আওয়ামী লীগ শাসানমলের নানা অপকর্মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রদর্শনীতে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘৩৬ জুলাই উদ্‌যাপন’ উপলক্ষে ‘Do you Miss me?’ শীর্ষক এই ড্রোন প্রদর্শনী করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রদর্শনী হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তা পিছিয়ে রাত ১১টায় করা হয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এ আয়োজনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং সহযোগিতা করে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়। প্রদর্শনীর সময় হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির আয়োজন ‘৩৬ জুলাই উদ্‌যাপনে’ ড্রোন শো। মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়।

প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চলা এ প্রদর্শনীতে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র, পালিয়ে যাওয়া হেলিকপ্টার, আয়নাঘর, একরামুল হত্যাকাণ্ড, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক লুটের চিত্রসহ ১২টি মোটিফ ফুটিয়ে তোলা হয়।

প্রদর্শনীর শুরুতেই দেখানো হয় রক্তমাখা দাঁতসহ শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র, এরপরে দেখানো হয় ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া হেলিকপ্টার, তারপরে একে একে ড্রোনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় আয়নাঘর, একরামুল হত্যাকাণ্ড, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড, ব্যাংক লুটের ঘটনায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সালমান এফ রহমানের চিত্র।

ড্রোন শোতে তুলে ধরা হয়েছে কক্সবাজারে ক্রসফায়ারে নিহত একরামুল হকের মেয়ের সেই উক্তি। মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়।

পরে প্রদর্শন করা হয় ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে লেখা ‘আমরা জানি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে পাড়ি দিতে হবে অনেক পথ, কিন্তু পথ দুর্গম বলে থামব না আমরা বাংলাদেশ পক্ষের লোক’। এরপর ‘আগে খুনি সরকারের ভয়ে মানুষ পোস্ট ডিলিট করত, এখন জনগণের ভয়ে সরকার পোস্ট ডিলিট করে’ লেখা ড্রোনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। সবশেষে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাসংবলিত লেখা ‘সবাই মিলে আমরা গড়ব বাংলাদেশ ২.০’ ফুটিয়ে তোলা হয়।

ড্রোন শোতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র। মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়।

পরিবার নিয়ে ড্রোন শো দেখতে আসেন গাড়িচালক আজিজুর রহমান। রাজধানীর রায়েরবাজার থেকে তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আসেন তিনি।

জানতে চাইলে আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাচ্চারা গত বছরের জুলাই ও শেখ হাসিনার খারাপ কাজের গল্প মুখে মুখে শুনেছে। শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার দিনে সেসব দেখতে এসেছে।’

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির আয়োজন ‘৩৬ জুলাই উদ্‌যাপনে’ ড্রোন শো। মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়।

এর আগে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ‘৩৬ জুলাই উদ্‌যাপন’–এর দিনব্যাপী আয়োজন শুরু হয়। সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায় দেশের গান দিয়ে দিনের আয়োজন শুরু হয়। এর পরেই কলরব শিল্পীগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করে। এরপর দিনব্যাপী একে একে গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী এলিটা করিম, পারশা, ইথুন বাবু ও মৌসুমি, নাহিদ, তাশফি, সেজান। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে হাজার হাজার মানুষ এই উদ্‌যাপনে অংশ নেন।
ড্রোন শোতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ঐক্যের বাংলাদেশের চিত্র। মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়।

বেলা ২টা ২৫ মিনিটে প্রতীকী হেলিকপ্টার উড়িয়ে শেখ হাসিনার ‘পলায়ন ক্ষণ’ উদ্‌যাপন করা হয়। আর বিকেল পাঁচটার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পাঠ করা হয় জুলাই ঘোষণাপত্র। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

এরপর ব্যান্ড দল ওয়ারফেজ, শূন্য, সোলস, চিটাগং হিপহপ হুড, নৃগোষ্ঠী নারীদের ব্যান্ড দল ‘এফ মাইনর’ ও আর্টসেল গান পরিবেশন করে। সবশেষ আয়োজন ছিল বিশেষ ড্রোন প্রদর্শনী।

ড্রোন শোতে উঠে এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়। মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়।





Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)